ভাংগুড়া চলনবিল বিধৌত একটি জনপদ। ভাংগুড়া উপজেলা ০৫টি ইউনিয়ন (ভাংগুড়া, পার-ভাংগুড়া, অষ্টমনিষা, খানমরিচ, দিলপাশার) ও ০১টি পৌরসভা (ভাংগুড়া পৌরসভা) নিয়ে গঠিত। মূলতঃ গুমানী এবং বড়াল নদী বেষ্টিত এই ভূ-ভাগ চলনবিল সন্নিহিত হওয়ায় প্লাবন সমভূমি দ্বারা গঠিত। প্রাচীন ইতিহাস সম্পর্কে তেমন সাক্ষ্য পাওয়া যায় না। তবে এর বুক চিরে খুলনা-ঢাকা, রাজশাহী-ঢাকা, দিনাজপুর-ঢাকা রেল যোগাযোগ বৃটিশদের দ্বারা তৈরী হওয়ায় তৎকালীন সময়ে ভাংগুড়ার সাথে কলিকাতার যোগাযোগ ছিল। ভাংগুড়া নামটা নিয়ে কিংবদন্তী প্রচলিত আছে। অনেকে বলেন- বড়াল এবং গুমানী নদীর ভাঙ্গন কবলিত এলাকা হওয়ায় এর প্রাচীন নাম ছিল ভাংগুরিয়া। এভাবে ভাংগুরিয়া থেকে ভাংগুড়া নামের উদ্ভব হয়। বর্তমানে গুমানী ও বড়ালের সংযোগকারী একটি খালের স্রোতরেখা বিদ্যমান আছে। যার ফলে এই জনশ্রুতির পক্ষে প্রমাণ পাওয়া যায়। অনেকে বলে থাকেন নেশা জাতীয় ভাং গাছের গুড়া এখানে প্রচুর পরিমাণ পাওয়া যেত সেজন্য এর নাম ভাংগুড়া হয়। এ মতের পক্ষে তেমন জোড়ালো প্রমাণ পাওয়া যায় না। চাটমোহর ও ফরিদপুর থানার কিছু অংশ নিয়ে ১৯৮১ সালে ভাংগুড়া উপজেলা গঠিত হয়। এর আগেভাংগুড়া ফরিদপুর থানার একটি ইউনিয়ন ছিল। ভাংগুড়া আপগ্রেড থানা হয় ১৯৮২ সালে। ভাংগুড়া গ্রামের নামানুসারে ভাংগুড়া উপজেলার নাম করণ করা হয়েছে।
ভাংগুড়া উপজেলার উত্তরে- তাড়াশ, দক্ষিণে-ফরিদপুর, পশ্চিমে- চাটমোহর ও পূর্বে- উল্লাপাড়া উপজেলা অবস্থিত। ভাংগুড়া উপজেলার খানমরিচ ইউনিয়নটি চলন বিলের মধ্যে অবস্থিত এবং ঐ এলাকার পুকুর খননের সময় কয়েক বছর আগে বিভিন্ন ধরনের পৌরানিক দেবদেবীর মূর্তি পাওয়া গেছে। যা জাতীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। ফলে এই ভূমি উন্নত সভ্যতার সংস্পর্শে থাকা স্বাভাবিক। উত্তরাঞ্চলের পুন্ড্রনগর সভ্যতার সাথে তার যোগাযোগ থাকতে পারে বলে মনে করা হয়। বর্তমানে ভাংগুড়া সড়ক,রেল এবং নদীপথে ঢাকা-খুলনা-রাজশাহী-নাটোর-দিনাপজুর-রংপুর-বগুড়ার সাথে যুক্ত। এ কারণে বাংলাদেশের সমগ্র অঞ্চলের সাথেভাংগুড়ার উন্নত যোগাযোগ থাকায় এ উপজেলায় উন্নয়নেরঅমিত সম্ভাবনা লুকিয়ে আছে। পরিকল্পিত নগরায়ন ভাংগুড়া শহরকে এ অঞ্চলের একটি উন্নত মানব বসতি কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তুলতে পারে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস